অসঙ্গতিতে সঙ্গতি!
-রীণা চ্যাটার্জী
সুধী,
কঠিন পরিস্থিতি। মনকে সান্ত্বনা দিতে সবসময়ের ভরসা বিশ্বকবি, “ধর্মের বেশে মোহ যারে এসে ধরে/ অন্ধ সে জন শুধু মারে আর মরে।” কিন্তু তা’ও সান্ত্বনা মেলে না। ধর্মের বেশে ভিড়ের উদগীরণ দেখলো বিশ্ব, হয়তো বা খানিকটা স্তম্ভিত বিশ্ব। দোষ কার বা কাদের? শুধুই প্রশাসন! একতরফা আঙুল তুলে লাভ নেই। যারা এলো, ছড়ালো, মেলে ধরলো- তারাও তো দোসর। যারা দয়া করে মুখবন্ধনী পড়লো কিন্তু নাক খুলে রাখলো, থুতনিতে দাড়ির মতো শোভাবর্ধন করালো- জনে জনে দেখার দায় কার?
পুলিশ আছে, সেবাকর্মী আছে, পৌরসভার কর্মী আছে- ওদের দায়? ওদের জীবন এতো মূল্যহীন? চাকরি বাঁচাতে মহামারীর জঙ্গলে থাকতে হবে! প্রশ্ন মনে এলেও, উত্তর খুঁজতে নেই- তাতেই বিপদ ঘন্টা বাজবে। ক্ষমতার দাম্ভিক শিং বাগিয়ে আসবে ছিন্নভিন্ন করে দিতে- ওদের জন্য আইন যেন হাতের আঙুল, যেভাবে খুশি মুঠো করো, মুঠো ভরো।
আমাদের দেখতে হয়- বিক্রিত, বিকৃত আইন ব্যবস্থার প্রহসন। আদালতকে “মহামান্য” বলবো? থাক ওই প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়া ভালো, যতোই হোক আমরা সজ্জিত ও সুসজ্জিত নাগরিক। Decency and decorum রক্ষা করা আমাদের অবশ্যই কর্তব্য। তবুও মনের বুনোপনা যায় না- মনে হচ্ছে মাঝে মাঝে সব উন্মত্ত, উলঙ্গ, আধা উলঙ্গ, রাজনৈতিক ব্যাপারী, আইনের তথাকথিত শিরদাঁড়া বিক্রি করা রক্ষাকারী, সবকটাকে সাগরে চুবিয়ে দিতে পারলে শান্তি হতো খানিকটা- পৃথিবীর বুকে আর্বজনা হয়ে জমে আছে সব। আর্বজনা ধোয়ার বড়ো শখ কিন্তু ওই যে Decency and decorum বয়ে চলছে ফল্গু ধারায়-
অসঙ্গতিতে সঙ্গতি খুঁজে নিতে।
নির্বাচন পিছিয়ে যারা মহৎ ও মহান হবার চেষ্টায় ব্রতী, তাদের মুখোশের আড়ালে কিন্তু অন্য গল্প। প্রচার করার জন্য লেজুরগুলো প্রায় সবাই আক্রান্ত। প্রচারের দাপাদাপি ছাড়া কি নির্বাচন মানায়! প্রচার ছাড়াও নির্বাচনী নানান কলাকৌশলের কুশীলব ওই দু’ পেয়ে লেজুড়গুলো ছাড়া যে অসম্ভব। তাহলে ফলাফলের দিন গলা উঁচু করে হাত জোড় করে বিনয়ের অবতার হয়ে মাথা পেতে জনগণের রায় মেনে নেওয়া নেতাদের কি হবে? অঙ্ককষাটা তো আগে ঠিক করে করতে হবে। তাই যে লেজুরগুলো খোঁয়াড়ে ঢুকেছে- সাত, দশদিন ঘরের খেয়ে পার্টির (নির্দেশ মানতে) হয়ে মোষ তাড়াতে ফিরে আসুক, সেই সময়টুকুতে যতটা দায়িত্বের মুকুটে মহান হওয়া যায়।
সাধারণ মানুষের কথা বা বিশেষজ্ঞদের কথা বা ডাক্তারদের মতামত এইসবের পরোয়া ক্ষমতাধারী শিং-গুলোর কোনোদিন ছিল না। কারণ এরা স্বশিক্ষায় অশিক্ষিত।
ভালো কথা আর যেন মনে ঠাঁই পায় না, ধুস…নিন্দেকুটে মন। শুধু শুধু নিন্দে করে মিছিমিছি- মানবসেবা ধর্মে ব্রতীদের এমন করে কি বলতে আছে!
নলেন গুড়ের সুবাস বাঙলার ঘরে ঘরে এখন- সুবাসিত হিমেল শুভেচ্ছা, মিঠে শুভকামনা আলাপী মন-এর পক্ষ থেকে সকলের জন্য।
স্ব-শিক্ষায় অশিক্ষিত একদম চরম যুক্তি সঙ্গত উপমা। সামনে আঙুল তোলা সহজ কিন্তু আঙুল বেঁকে নিজের দিকে আনাটা বড়ো কঠিন। তাই সহজ পথেই সহজ চলা। লেজুরগুলো ধুলো ওড়ায় ভাবে জয় করেছে বিশ্ব। আসলে একটু একটু আমরা এগিয়ে যাচ্ছি নিঃস্ব হতে- নিঃস্ব!
সহমত সুধী